Friday, December 15, 2017

ডিজিটাল মার্কেটিং কি? ডিজিটাল মার্কেটিং এ কাজ করার ১০টি উপায়।

ডিজিটাল মার্কেটিং শব্দের অর্থ ডিজিটাল কেনা-বেচা। তাই এইটিকে আমরা ডিজিটাল ব্যবসা বলতে পারি। মূলত, ইন্টারনেট ভিক্তিক পণ্য বা ব্যবসার প্রচার ও কেনা-বেচা করাই হল ডিজিটাল মার্কেটিং।

Digital Marketing


জেনে নিন ডিজিটাল মার্কেটিং এ কাজ করার ১০টি উপায়ঃ

সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং:
আপনার ব্যবসার প্রচার ও অনলাইনে কেনা-বেচা করার জন্য এর চেয়ে ভালো জায়গা আর খুঁজে পাবেন না।  ৫০ টাকার পণ্য হতে ৫০ হাজার টাকার পণ্য ও তার বেশী টাকার পণ্য বিক্রি করতে পারবেন সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে। এর জন্য ভিবিন্ন সোশ্যাল মিডিয়ায় আপনার ব্যবসা নিয়ে পেইজ খুলুন আর সেই পেইজ দিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় ভালো করে মার্কেটিং করুন। লোকদের পণ্যর ভিবিন্ন ধরণের অফার দিয়ে আকৃষ্ট করুন। দেখবেন আপনার ব্যবসার প্রচার ও হচ্ছে আর পণ্যর কেনা-বেচাও হচ্ছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় কিভাবে মার্কেটিং করবেন জানতে চাইলে আমাদের আগের লেখাটি পড়ে আসুন।https://onlinejonaki.blogspot.com/2017/12/blog-post_13.html

ভাইরাল মার্কেটিংঃ
আপনি যেই সেক্টরেই থাকুন না কেন, আপনার ব্যাবসা প্রতিষ্ঠানের সাফল্যর জন্য ভাইরাল মার্কেটিং ও কন্টেন্টের গুরুত্ব বলে হয়তো শেষ করা যাবে না। ছবি বা লেখাকে প্রমোট করতে আপনার আর তেমন কষ্ট করার প্রয়োজন হবে না। মানুষ ভাইরাসের মত কন্টেন্টি ছড়িয়ে দেবে। এই ধরণের কন্টেন্ট তৈরী ও প্রকাশ করার পরে আপনার কাজটি হল তার দিকে নজড় রাখা। যেমনঃ ফেসবুক, টুইটার, ইউটিউব ইত্যাদি প্রায় সকল Social Media তে ইনসাইট বা এ্যানালিটিকস রয়েছে যা দিয়ে আপনি একটি কন্টেন্ট কতোটা ভালো পারফর্ম করছে বা না করলে কি সমস্যার কারণে করছে না ইত্যাদি জানতে পারেন। একটি কথা না বললেই নয়! তা হল ভালো কন্টেন্ট তৈরী করুন। ক্যাপশান ও পোস্ট করার সময়; প্রিভিউ ইমেজ ইত্যাদির উপরেও অনেকাংশে ভাইরালিটি নির্ভর করে।

সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশনঃ 
SEO বা সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন হল যখন কেউ গুগুল,ইয়াগু,বিং ও ভিবিন্ন সার্চ ইঞ্জিনে সার্চ করে তখন আপনার ওয়েবসাইটের নাম চলে আসা। যখন আপনি আপনার ওয়েবসাইটের SEO করবেন আর আপনার ওয়েবসাইটে ভালো মানের আর্টিকেল থাকবে, তখন কেউ ঐ আর্টিকেল এর কোন কি-ওয়ার্ড নিয়ে সার্চ দিলে আপনার ওয়েবসাইটটি সার্চ ইঞ্জিনে চলে আসবে। ওয়েবসাইটের ভালো ভিজিটর পেতে এইটি খুব প্রয়োজনীয়। তাই আপনার কমার্শিয়াল ওয়েবসাইট ও ব্লগ সাইটকে SEO করে রাখুন। কারণ, এখন লোকেরা পণ্য কিনার আগে ও কোন কিছু জানতে চাইলে আগে গুগুলে সার্চ দেই। 

মোবাইল মার্কেটিংঃ
(SMS) মার্কেটিং, (MMS) মার্কেটিং, ব্লুটুথ মার্কেটিং, ইনফ্রারেড মার্কেটিং এর মাধ্যমে মোবাইল মার্কেটিং করা হয়। আর এগুলোর মধ্যে “SMS FOR MOBILE” মার্কেটিং পদ্ধতি খুবই গুরুতুপূর্ণ। আপনি ভার্চুয়াল জগৎ এর; ডিজিটাল যুগের মানুষ। আপনার ফেসবুক, টুইটারে অনেক ফলোয়ার থাকতে পারে। তাদেরকে আপনি মেসেজ অথবা টুইট করতে পারেন আপনার keyword গুলো। হয়তো তারাও SMS এর মাধ্যমে আপনার প্রোডাক্টের সাবস্ক্রাইবার হতে পারে। যারা আপনার প্রোডাক্টের নিয়মিত সাবস্ক্রাইবার হয়েছে তাদেরকে আপনি আপনার প্রোডাক্ট সম্পর্কিত বিবরণের মেসেজ পাঠাতে পারেন। মেসেজ হবে সংক্ষিপ্ত, to-the–point এ এবং ১৬০ ওয়ার্ডের বেশী নয়। মেসেজ হবে ফ্রেন্ডলি যাতে সাবস্ক্রাইবার এমন মনে না করে যে আপনি আপনার কোম্পানীর প্রোডাক্ট কেনার জন্য তাকে প্ররোচিত করছেন। এই মার্কেটিং পদ্ধতিটি খুবই ফ্লেক্সিবল এবং এটি টাকা তৈরীর টুল হিসেবে ব্যবহৃত হতে পারে।
ইমেইল মার্কেটিংঃ
বর্তমানে ইমেইল মার্কেটিং খুব জনপ্রিয়। যখন আমি আমার বার্তা গ্রাহকদের কাছে ইমেইলের মাধ্যমে পোঁছাবো তখন তাকে আমরা ইমেইল মার্কেটিং বলব। ইমেইল মার্কেটিং হচ্ছে একটি অনলাইন মার্কেটিং পদ্ধতি যার মাধ্যমে আপনি সাইটের ও ব্যবসার প্রচার করতে পারবেন। গ্রাহকদের কাছে পণ্যর প্রচার করতে ইমেইল মার্কেটিং অপরিহার্য। সুতরাং, ইমেইল মার্কেটিং করেও আপনি ব্যবসায় সফল হতে পারেন।

অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিংঃ

আপনি যখন আপনার ডিজিটাল মার্কেটিং স্কিলটা ব্যবহার করে অন্য কারো প্রোডাক্ট অথবা সার্ভিস কমিশন ভিত্তিক প্রমোশন করবেন সেটা হবে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং। অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং এমন কোন বিষয় নয় যেখানে আপনি রাতারাতি খুব বেশি কিছু করে ফেলতে পারবেন। এখানে তারাই সফল হবে যারা ধৈর্য্য সহকারে কাজ করে যেতে পারবে।

ইন্টারেক্টিভ মার্কেটিংঃ

আপনার ওয়েবসাইটে কি ধরনের ভিজিটর আসে আর কতজন ভিজিটর আসে তার উপরেই আপনার ওয়েবসাইটের সকল সাফল্য নির্ভর করে। আপনি একটা ভিডিও তৈরি করে সেটা বিভিন্ন ভিডিও সাইটে দিতে পারেন যেমন ইউটিউব, ডেইলিমোশন, ভিমিও, রেভের ইত্যাদি। এতে আপনার ভিডিওটি ছড়িয়ে পড়বে আর অনেক মানুষকে আপনার ওয়েবসাইটে আসতে বাধ্য করবে।

ডিজিটাল ডিসপ্লে বিজ্ঞাপনঃ

এটি অনেকটা আবার আপনার SEM ডিজিটাল মার্কেটিং এর একটি উপসেট মার্কেটিং ব্যবস্থা। সম্ভাব্য শ্রোতাদের লক্ষ্য করে ডিসপ্লে বিজ্ঞাপন ফরম্যাটের বিভিন্ন টুল ব্যবহার করতে পারেন- এটি টেক্সট, ইমেজ, ব্যানার, সমৃদ্ধ মিডিয়া, ইন্টারেক্টিভ বা ভিডিও বিজ্ঞাপন হতে পারে। আপনার আগ্রহ, বিষয়বস্তু বিষয় বা ক্রয় চক্রের গ্রাহকের অবস্থানের উপর ভিত্তি করে আপনার বার্তা কাস্টমাইজ করতে পারেন।
তবে মনে রাখবেন, ডিজিটাল ডিসপ্লে বিজ্ঞাপন তুলনামূলকভাবে ব্যয়বহুল। আপনি আপনার ব্যবসার জন্য ভাল ROI চালনা করলে বিশেষজ্ঞদের মতামতের প্রয়োজন হতে পারে।

কন্টেন্ট সৃষ্টি করাঃ

গবেষণায় দেখা গেছে বিষয়বস্তু নির্মাণের জন্য গুগলের অ্যালগরিদম ২০১৪ ব্যবহৃত হয় বেশি। সাম্প্রতিক সময়ে গুগল অ্যালগরিদম পরিবর্তন করেছে। অনলাইনে আপনার কনটেন্ট, যেকোন পোস্ট কিংবা ফোরাম ডিসকাশনে যাতে আপনার টার্গেটেড কিওয়ার্ডের উপস্থিতি থাকে যাতে খুব সহজে আপনার টার্গেটেড পাঠক আপনাকে খুঁজে পেতে পারেন। প্রতিদিন নির্দিষ্ট সময় পর পর মাল্টিমিডিয়া কন্টেন্ট গুলোকে আপডেট করা উচিৎ। সোশ্যাল মিডিয়া কন্টেন্ট পোস্ট করা ক্ষেত্রে অটোমেটিক প্রক্রিয়া ব্যবহার করা উচিৎ। আপনার বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মের জন্য আপনার বিষয়বস্তু কাস্টমাইজ করতে হবে। উদাহরণস্বরূপ, মোবাইল ফোনের জন্য বিষয়বস্তু সহজ এবং সংক্ষিপ্ত হতে হবে। মনে রাখবেন, একটি কার্যকর কৌশল আপনার পাঠকদের জন্য তৈরি করবেন এবং তারা আপনার কাছ থেকে আরো তথ্য জানতে আগ্রহী হবে। একটি ভাল কন্টেন্ট ভাগ করা এবং আপনার ব্যবসা ব্র্যান্ডিং জন্য সবচেয়ে ভাল উপায়।

ওয়েব এনালিটিক্সঃ

আপনার ডিজিটাল মার্কেটিং এর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দিক ওয়েব Analytics। মূলত, ওয়েব এনালিটিক্স সংগ্রহ করা, পরিমাপ বুঝতে, বিশ্লেষণ, পরিকল্পনা, রিপোর্ট করা এবং আপনার ব্যবসার জন্য ওয়েব কার্যক্রম ভবিষ্যদ্বাণী করতে আপনাকে সাহায্য করবে। ওয়েব এনালিটিক্স ওয়েব পরিসংখ্যান সঙ্গে গুলিয়ে ফেলা উচিত নয়। কিছু গুরুত্বপূর্ণ ওয়েব এনালিটিক্স হচ্ছে গুগল এনালিটিক্স, স্প্রিং মেট্রিক্স, অপেরা, প্রিন্ট। এটা বলার অপেক্ষা রাখে না যে প্রত্যেক বিজ্ঞাপনদাতা তার ব্যবসা বুঝতে ওয়েব এনালিটিক্স ব্যবহার করে থাকে।
এটা গুরুত্বপূর্ণ যে আপনি আপনার ব্যবসার জন্য বিভিন্ন মার্কেটিং কৌশল ব্যবহার করতে পারেন এবং এর মধ্যে থেকে আপনাকে বেছে নিতে হবে কোন কৌশলটি ব্যবহার করলে বেশি লাভবান হবেন। ডিজিটাল মার্কেটিং একটি গতিশীল মাধ্যম এবং আপনি সবসময় আপানার কাজের উপর ভিত্তি করে এটি পরিবর্তন করতে পারবেন। আপনি আপনার গ্রাহকদের চেনেন এটাই যথেষ্ট নয়। কোম্পানীর পণ্যের প্রসারের জন্য আমরা বিভিন্নভাবে মার্কেটিং করি যেমনঃ লিফলেট, পোস্টার ইত্যাদি। বর্তমানে ডিজিটাল যুগ। ডিজিটাল মার্কেটিংয়ে সবচাইতে বেশি মানুষের কাছে পণ্যের প্রচার করা যায় এবং ডিজিটাল মার্কেটিংয়েই সবচাইতে বেশি ব্যবসায়িক সফলতা পাওয়া যায়। অনেক ধরণের ব্যবসা আছে যে গুলো গড়েই উঠেছে সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিংকে কেন্দ্র করে।

No comments:

Post a Comment