Tuesday, January 2, 2018

নতুন বছরে ভ্রমণের জন্য কোন জায়গাকে বেঁচে নিবেন জেনে নিন।

রুপ প্রকৃতির দেশ বাংলাদেশ। বাংলাদেশের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্য উপভোগ করার জন্য প্রতিবছর-ই লোকেরা ভ্রমণ করে থাকে। কিন্ত, স্থান নিয়ে সঠিক ধারণা না থাকার কারণে অনেকের ভ্রমণের আনন্দটা বৃথা হয়ে যায়।

জেনে নিন কিছু ভ্রমণের স্থান সম্পর্কেঃ


কক্সবাজারঃ

কোথাও ভ্রমণ করতে যাওয়ার নাম মুখে এলেই আমাদের আগে কক্সবাজারের নাম মুখে চলে আসে। এই স্থান সম্পর্কে প্রথমে লেখার কারণ হল বেশিরভাগ পর্যটকরা এখানে এসে ভোগান্তির শিখার হয়!
কক্সবাজার ভ্রমণ করার জন্য ভিবিন্ন স্থান আছে। তার মধ্যে উল্লেখ্য কিছু জায়গা হলঃ

ইনানী বীচঃ  এই জায়গায় যখন আমি প্রথম যাই, দৌড়ে চলে যায় সমুদ্রের কাছে। কাছ থেকে সমুদ্রকে উপভোগ করার জন্য এই জায়গার তুলনা হয় না। খুব শান্ত প্রকৃতির সৈকত এই ইনানী। 
ইনানী সৈকতের প্রধান আকর্ষন পাথর। ছোট-বড় পাথরের উপর সমুদ্রের দেউ, এই যেন মনকে ঢেউ দিয়ে যায়! কক্সবাজার গিলে অবশ্যই এই জায়গার সৌন্দর্য্য মিস করবেন না।

হিমছড়ীঃ কক্সবাজারে গেলে এই নামটি হয়ত শুনে থাকবেন। এই হিমছড়ী পাহারের উপর উঠে জীবনেও আর হিমছড়ী যাবার নাম নিবেন না। আমি এই জায়গায় গিয়ে খুব বিরক্ত হয়। তেমন সুন্দর কোন দৃশ্য নেই। শুধু পাহাড়ে উঠা!

মহেশখালীঃ বাংলাদেশের একমাত্র পাহাড়ি দ্বীপ মহেশখালী। এ জায়গাটি মূলত বিখ্যাত এখানকার আদিনাথ মন্দিরের জন্য। আঁকাবাঁকা সিঁড়ি ভেঙ্গে আদিনাথ পাহাড়ের চূড়ায় উঠলেই পাওয়া যাবে বিখ্যাত আদিনাথ মন্দির। এ দ্বীপের দক্ষিণে রয়েছে বিস্তীর্ণ সাগর আর পশ্চিমে বিশাল বিশাল পাহাড়। এছাড়া এখানে আছে খুবই মনোরম একটি বৌদ্ধ মন্দির। মহেশখালীতে থাকার তেমন ভালো কোন ব্যবস্থা নেই। তবে সেটা কোন সমস্যাই না। কেননা কক্সবাজার থেকে সকালে গিয়ে এ দ্বীপটি ভালো করে দেখে আবার বিকেলের মধ্যেই ফেরা সম্ভব। কক্সবাজার ট্রলার ঘাট থেকে মহেশখালী যেতে পারেন স্পিড বোট অথবা ইঞ্জিন বোটে। স্পিড বোটে লাগেবে ১৫ মিনিট আর ইঞ্জিন বোটে প্রায় ১ ঘন্টা। ভাড়া যথাক্রমে ১৮০ ও ৪০ টাকা।

ডুলাহাজারা সাফারি পার্ডুকঃ ডুলাহাজারা সাফারি পার্কটি কক্সবাজার জেলা সদর থেকে ৪৮ কিলোমিটার উত্তরে এবং চকরিয়া থানা থেকে ১০ কিলোমিটার দক্ষিণে,কক্সবাজার জেলা সদরের দক্ষিণ বন বিভাগের ফাসিয়াখালি রেঞ্জের ডুলাহাজারা ব্লকে অবস্থিত। খুব পুরাতন আর নিরিবীলি একটি পার্ক। এইখানে পাহাড়ী ভিবিন্ন প্রাণী দেখতে পারবেন। মোটামুটি সুন্দর।
   
বান্দরবনঃ

নিলাচলঃ কাছ থেকেই যেন মেঘকে ছুঁইতে পারবেন। খুব সুন্দর একটি পাহাড়ী জায়গা। বান্দরবন আসলে অবশ্যই এই জায়গাটি দেখে যাবেন। মন মুগ্ধ হয়ে যাবে।

মেঘলাঃ এইখানে একটা ঝুলন্ত ব্রিজ আছে। এই ব্রিজটি দেখতে চাইলে মেঘলা যেতে পারেন। আমার তেমন সুন্দর লাগেনা মেঘলা! বান্দরবন আমার পাশে বলে হয়ত এই জায়গাটি আমার চোখে কম সুন্দর লাগতে পারে দেখতে দেখতে! যাই হোক, দূর থেকে আসা সব লোকদের মন কাড়ে এই বান্দরবন।


চট্রগ্রামঃ


Zia Complex: zia complex বা এখন নাম চেঞ্জ হওয়া সাধীনতা কম্পেলেক্স অসাধারণ একটি পার্ক। এইখানে ভিবিন্ন ধরণের বাড়ী ভবন করে সাজানো হয়েছে। আছে সুন্দর সুন্দর লেক। আমার প্রিয় একটা জায়গা! এই জায়গায় ভ্রমণ করতে গেলে ভ্রমণ বৃথা যাবে না। যারা চট্রগ্রামের বাইরে থাকেন এই জায়গায় এসে দেখে যেতে পারেন।

এছাড়াও, এইখানে পালকিচর ও ভিবিন্ন পার্ক রয়েছে।

সিলেটঃ

বাংলাদেশে বলতে গেলে প্রায় সব জায়গায় ঘুরছি। এর মধ্যে আমার সবচেয়ে বেশী সুন্দর লাগে ও যেতে মন চাই সিলেটে। অনেকে সিলেট সম্পর্কে তেমন জানেন না।

চা-বাগানঃ সিলেট যাওয়ার পথে রাস্তার দুই পাশে  দৃষ্টিনন্দন এই চা-বাগানের দেখা পাবেন। অপরূপ সৌন্দর্য্য এই চা-বাগান। আপনার চোখ দুইটি কেঁড়ে নিবে এই চা-বাগান! হা হা! আরে আপনার চোখ ঐ চা-বাগানের দিকে থাকিয়ে থাকবে। এমন সুন্দর এই চা-বাগান গুলো।

শহজালাল ও শাহপারাণ (রঃ) এর মাজারঃ সিলেটে এসে এই মাজারগুলো না দেখলে আর সিলেটে এসেই বা লাভ কি! এইখানে দেখতে পাবেন ঝাঁক-ঝাঁক কবুতর। ইচ্ছে হবে, এই কবুতরগুলোর সাথে একটু হাঁটি! এইখানের কবুতরগুলো অপরুপ সুন্দর। এছাড়াও, শাহজালাল (রঃ) এর মাজারে আছে ৩টি বড় ডেক। যা, নদী দিয়ে  অলৌকিকভাবে ভেসে এসেছিল। অনেকে দূর-দূড়ান্ত থেকে আসেন এই ডেক গুলো দেখার জন্য। এছাড়াও, এইখানে এক প্রজাতির মাছের দেখা পাবেন। আছে, বিশাল এক কবর স্থান। যার মধ্যে চিরনিদ্রায় শায়িত আছে নায়ক সালমান শাহ। ঐখানে মরহুমদের নাম কবরের উপর লেখা আছে।

জাপলংঃ এই জায়গাটি সবচেয়ে বেশী মন মুগ্ধ করে। জাফলং, বাংলাদেশের সিলেট জেলার গোয়াইনঘাট উপজেলায় অবস্থিত যা সিলেট শহর থেকে ৬২ কিলোমিটার উত্তর-পূর্ব দিকে, ভারতের মেঘালয় সীমান্ত ঘেঁষে খাসিয়া-জৈন্তা পাহাড়ের পাদদেশে অবস্থিত। ওপারে খাসিয়া জৈন্তা পাহাড়, এপারে নদী। পাহাড়ের বুক চিড়ে বয়ে চলছে ঝর্ণা, আর নদীর বুকে স্তরে স্তরে সাজানো নানা রঙের নুড়ি পাথর। দূর থেকে তাকালে মনে হবে আকাশের গায়ে হেলান দিয়ে দাঁড়িয়ে আছে পাহাড়। পাহাড়ের গায়ে নরম তোলার মতো ভেসে বেড়াচ্ছে মেঘরাশি। প্রকৃতির এই অপরুপ সৌন্দর্য আর কোথায় পাবেন, জাফলং ছাড়া? প্রকৃতি কন্যা হিসাবে সারাদেশে এক নামে পরিচিত সিলেটের জাফলং। পিয়াইন নদীর তীরে স্তরে স্তরে বিছানো পাথরের স্তূপ জাফলংকে করেছে আকর্ষণীয়। নদীর নিচে তাকালে পাথরগুলো সচ্ছ পরিস্কার দেখা যায়। এই নদীর পানিগুলো খুব পরিস্কার। নদীর দিকে থাকালে পানির মধ্যে দিয়ে মাঠি, পাথর ও বালু দেখতে পাবেন। এইখানে বাংলাদেশ ও ইন্ডিয়া সীমানা দেখতে পাবেন। এছাড়াও, অনেক কিছু রয়েছে। সবমিলিয়ে জাফলং অন্যরকম সুন্দর।


জাপলং

No comments:

Post a Comment